প্রকাশিত: ২২/০৪/২০১৮ ৭:২৮ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৩:৫২ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম::
উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৮৫ শতাংশ টিউবওয়েলই অকেজো হয়ে পড়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অল্পকিছু টিউবওয়েলে পানি আসছে। এ সামান্য পানি দিয়ে সবার চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। ফলে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে দেখা দিয়েছে খাবার পানির তীব্র সংকট। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পানির চাহিদা পূরণে গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ শুরু করলেও তা এখনো শেষ হয়নি।

গতকাল শনিবার সকালে উখিয়ার মধুরছড়া, লম্বাশিয়া, ময়নারঘোনা, তাজনিমারখোলা ক্যাম্প ঘুরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। তাদের অভিযোগ টিউবওয়েল স্থাপনের নামে সম্পৃক্ত ঠিকাদারগণ টাকা লুটপাট করে তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে।

প্রচণ্ড তাপমাত্রায় কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে পলিথিনের ঝুপড়িগুলোর ভেতরে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গা মাঝি হামিদ হোসেন জানান, তাদের ক্যাম্পের একটি টিউবওয়েলেও পানি নেই। অনেকেই বাজার থেকে বোতলজাত পানি ক্রয় করে তৃষ্ণা নিবারণ করছেন। অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজের জন্য পানি মিলছে না। পানির অভাবে শিশু ও বৃদ্ধরা ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে। তারা আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগে। তিনি জানান, পানির সমস্যা দূরকরণে সরকারিভাবে গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ চলছে। তবে কবেনাগাদ তাতে পানি পাওয়া যাবে তা সঠিক করে বলা যাচ্ছে না।

থাইংখালী তাজনিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রয়েছে প্রায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গারা আশ্রয় নেওয়ার শুরুতেই নলকূপ বসানোর হিড়িক পড়েছিল। কে কিভাবে নলকূপ স্থাপন করেছে তার কোনো হদিস নেই। ক্যাম্পের হেড মাঝি মোহাম্মদ আলী জানান, স্থানীয় পাড়াপড়শির বাসাবাড়ি থেকে অনেকেই পানি সরবরাহ করছে। তবে রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগ খাল, নালা, পুকুর ও জলাশয়ের পানি ব্যবহার করছে। যে কারণে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অসংখ্য রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু।

ক্যাম্পে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ব্র্যাকের স্বাস্থ্যকর্মী লিলুফা ইয়াসমিন জানান, ক্যাম্পে পানিবাহিত রোগ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। শিগগির বৃষ্টি না হলে রোহিঙ্গাদের পরিণতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মেজবাহ উদ্দিন।

এব্যাপারে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সরকারিভাবে সাতশ’ গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। উখিয়ায় স্থানীয়দের জন্য পাঁচ’শ গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন দাতাসংস্থা ক্যাম্পে পাঁচ হাজার ৫৩টি অগভীর নলকূপ ও ৪৭৩টি গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে। তিনি বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও অনাবৃষ্টির ফলে পানির স্তর ৫০ থেকে ৬০ ফুট নিচে চলে যাওয়ায় ৮৫ শতাংশ নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। পানির চাহিদা পূরণে কাভার্ড ভ্যান দিয়ে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, অনাবৃষ্টির কারণে ক্যাম্পগুলোতে পানি সমস্যার সৃষ্টি হলেও তা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও বিভিন্ন এনজিও সংস্থা কাজ করছে।

পাঠকের মতামত